How to write Thesis? (Bangla Guideline)

আপনি কিছু বন্ধু বা আত্মীয়কে দাওয়াত করে খাওয়াবেন। দাওয়াত দেয়া শেষ মানে আপনার কাজ শুরু। বাজারের লিস্ট করলেন, কি কি রান্না করবেন সেটাও ঠিক করলেন। এটাই হলো রিসার্চ প্রপোজাল। লিস্ট অনুযায়ী বাজার করা, রান্না করা হলো আপনার রিসার্চ। মেহমানদের সুস্বাদু খাবার দিয়ে আপ্যায়ন করা হলো আপনার থিসিস। খাবার ভালো হলে মেহমান খুশি আর আপনি গ্রাজুয়েট।
Thesis বা Dissertation একই অর্থে ব্যাবহৃত হয়ে থাকে, যদিও কেউ কেউ আন্ডারগ্রেড এবং মাস্টার্স ডিগ্রীর জন্যে থিসিস এবং ডক্টোরাল ডিগ্রীর জন্যে ডিসার্টেশন বলে থাকেন, অরিজিনালিটি এবং সিগ্নিফিকেন্স আলাদা বোঝাতে।
মাস্টার্স বা পিএইচডি এর ক্ষেত্রে অরিজিনালিটি নিয়ে যেমন সতর্ক থাকা দরকার, আন্ডারগ্রেড রিসার্চে সেখানে খানিকটা কম্প্রমাইজ করা যেতে পারে ধরে নেয়া হয়। বিষয়টাকে এভাবে বলা যায়, প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বিজ্ঞানমেলাতে বাচ্চারা কাগজের বক্স আর ভাঙা আয়না দিয়ে পেরিস্কোপ বানালেই সবাই খুশি, কিন্তু মাধ্যমিকে তা চলবেনা।
থিসিস লেখা যে কতটা কষ্টসাধ্য ব্যাপার, তা কেবল এই প্রক্রিয়ার ভিতর দিয়ে না গেলে বোঝা মুশকিল। কেউ কারো থিসিস লিখে দিতে পারেনা, সাধারণত সুপারভাইজর শুধু গাইড করে থাকেন। কাজটা সময় সাপেক্ষ, এর জন্যে দরকার যথেষ্ট প্রশিক্ষণ, গবেষণা, চর্চা এবং লেখার দক্ষতা।
প্রত্যেকের থিসিস আলাদা, তবে সবারই কিছু কমন আউটলাইন থাকে। আমরা কেবল সেসব নিয়ে কথা বলবো। মনে রাখবেন, Plagiarism থেকে দূরে থাকা জরুরী। আপনার গবেষণা যত সামান্যই হোক না কেন, সৎ থাকুন।

শুরু করার আগে কিছু কথা

১. রিসার্চ শুরু হয় প্রশ্ন নিয়ে। টপিক এবং থিওরী নিয়ে চিন্তা করা দরকার। কি কি প্রশ্নের উত্তর জানা নেই? বিভিন্নভাবে প্রশ্ন করুন।
২. উত্তর জানতে প্রাসঙ্গিক তথ্য-উপাত্ত খুঁজুন। আস্থা রাখা যায় এমন বই, ইন্টারনেট সাইট, গবেষণা-পত্র ঘেঁটে দেখুন। তথ্যগুলো একত্রিত করুন। রিসার্চ গ্যাপ খুঁজে বের করুন।
৩. আপনার টপিক সম্পর্কে যেহেতু সব তথ্য আপনার জানা হলো, এবার আপনার থিসিসের উদ্দেশ্যগুলোকে পরিষ্কারভাবে দাঁড় করান। এবার আপনার প্রপোজাল লেখার জন্যে আপনি প্রস্তুত। আগের লেকচারে বলেছি, প্রপোজালে থাকে আপনার কাজের উদ্দেশ্য, তাতপর্য, লিটারেচার রিভিউ, থিওরিটিকাল ফ্রেমওয়ার্ক, রিসার্চ সম্পর্কে প্রশ্ন, হাইপোথিসিস, কিভাবে ডেটা কালেক্ট ও এনালাইজ করবেন ইত্যাদি।
৪. সুপারভাইজরের গাইডেন্সে ফিল্ডওয়ার্ক, এক্সপেরিমেন্ট, ডেটা এনালাইসিস শেষ করুন। বার বার চিন্তা করুন অজানা উত্তর কতখানি পেলেন।
এবারে অধ্যায় ভিত্তিক আলোচনা করা যাক।

অধ্যায় ১. উদ্দেশ্য ও তাতপর্য বা ভূমিকা

পরিষ্কার করে আপনার থিসিসওয়ার্কের উদ্দেশ্য লিখুন এবং তাতপর্য ব্যাখ্যা করুন। কিভাবে আপনার কাজ ওই বিষয়ের বিশ্বের জ্ঞান-ভান্ডারকে সমৃদ্ধ করবে এবং কার কি উপকারে আসবে ইত্যাদি। আপনার কাজটা কতখানি মৌলিক অবদান রাখবে তাও সুন্দর করে ব্যাখ্যা করুন। কারন, পরিষ্কার উদ্দেশ্য ও শক্ত থিওরিটিকাল গ্রাউন্ড ছাড়া থিসিসের অর্থ নেই। তার মানে, পরিষ্কার করে টপিক এবং মেথডের বিস্তারিত ভূমিকা লিখতে হবে। রিসার্চ প্রবলেম বিবৃত করে ওই বিষয়ে রিসার্চের প্রয়োজনীয়তা উল্লেখ করতে হবে (ব্যাবহারিক এবং বৈজ্ঞানিক অবদান ইত্যাদি)। ভূমিকা এক বা দুই পৃষ্ঠার মধ্যে লেখাই উত্তম।

অধ্যায় ২. লিটারেচার রিভিউ

আপনার কাজটিতে কিছু থিওরিটিকাল ফ্রেমওয়ার্ক থাকবে। লিটারেচার রিভিউ এই বিষয়টাকে ব্যাখ্যা করবে এবং এই বিষয়ে আপনার জানামতে পূর্বের সব গবেষণাকে বিশ্লেষণ করবে; অবশ্যই রেফারেন্স সহ। এর মানে এই না যে, পূর্বের সব গবেষণাকে স্রেফ বলে যাওয়া। বরং উচিত হবে ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণ করা, কি করা হয়েছে আর কি করা হয় নাই। এই অজানাকে জানার ইচ্ছাই আপনাকে এই গবেষণায় অনুপ্রাণিত করেছে। অবশ্য কোন কোন ক্ষেত্রে বিভিন্ন প্রেক্ষাপটে প্রয়োজনে পূর্বের গবেষণার পূনরাবৃত্তিও করা হয়ে থাকে। লিটারেচার রিভিউ আসলে আপনার আইডাকে অর্গানাইজ করে, যেখানে থাকে একটা থিওরেটিকাল ফাউন্ডেশন বা ওভারভিউ, বিভিন্ন লিটারেচারের সহযোগিতা নিয়ে স্টোরী সাজানো, মডেল, হাইপোথিসিস, স্কোপ, লিমিটেশন ইত্যাদি।

অধ্যায় ৩. মেথডলজি

এখানে ব্যাখ্যা করা হয় এবং যাচাই করতে হয় উপাত্ত সংগ্রহের মেথড; কিভাবে ডেটা এনালাইজ করা হয়েছে। কোন মেথড ব্যাবহার করেছেন, কেন করেছেন, কেন এই মেথডকে এপ্রপ্রিয়েট ভেবেছেন। অনেক ক্ষেত্রে সঠিক রেফারেন্স আবশ্যক। এরপর বিস্তারিতভাবে ধাপে ধাপে উপাত্ত সংগ্রহ এবং বিশ্লেষণ পদ্ধতি বলুন।
এই ব্যাপারে সাধারণ প্রবণতা হলো,
– রিসার্চ ডিজাইনের ব্যাখ্যা (ইন্টারনাল এবং এক্সটারনাল ভ্যালিডিটি সহ)
– ব্যাবহৃত স্যাম্পল বা মেথডের জাস্টিফিকেশন
– ইন্সট্রুমেন্ট বা মেথডের ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণ পদ্ধতি (প্রি-টেস্ট, ইন্সট্রুমেন্ট বা মেথডের রিলায়েবিলিটি এবং ভেলিডিটি)
– অবজারবেশন তৈরীর পদ্ধতি
– ডেটা কোডিং
– ডেটা এনালাইসিস (স্ট্যাটিস্টিকাল এনালাইসিস এবং টেস্টিং, ক্যাটাগরি আইডেন্টিফিকেশন) ইত্যাদি।

অধ্যায় ৪. ফাইন্ডিংস বা রেজাল্টস

এখানে মূলত ডেটা এনালাইসিসের ফলাফল বর্ননা করা হয়ে থাকে। সাধারণত অন্য গবেষণার সাথে সম্পৃক্ততামূলক ব্যাখ্যা থাকে না। বিভিন্ন টেস্ট বা ফ্যাক্টর এনালাইসিস, হাইপোথিসিস টেস্টের ফলাফল ইত্যাদি উপস্থাপন করা হয়। টেবল এবং ফিগার ব্যাবহার করা হয় ফলাফল উপস্থাপন এবং নিমেরিক ইনফরমেশন সামারাইজ করতে। তার মানে, এই অংশে থাকবে সংক্ষিপ্ত ওভারভিউ, পদ্ধতি প্রয়োগের ফলাফল, কোন আনইউজুয়াল সিচুয়েশন মোকাবেলা (যদি থাকে), স্যাম্পলের প্রকৃতি, বিশ্লেষণ ও প্রবনতা, ভেলিডিটি বা রিলায়েবিলিটি বিশ্লেষণ ইত্যাদি।

অধ্যায় ৫. আলোচনা

এখানে আপনি কি খুঁজে পেলেন সেটার ব্যাখ্যাই শুধু নয়, বরং আলোচনা হওয়া উচিত আপনার ফাইন্ডিংস কতটা অর্থবোধক, ওই বিষয়ে জ্ঞান-ভান্ডারের সাথে সম্পৃক্ততা নিয়ে। আলোচনা খুব গুরুত্বপূর্ণ অংশ, যদিও অনেক স্টুডেন্ট এটাকে নিয়ে ভাবে কম। মাঝে মাঝে আলোচনাতে সম্পৃক্ততা বোঝাতে নতুন লিটারেচার উল্লেখ করা হয় এই অংশে। গবেষণাটির বাস্তব ইমপ্লিকেশন ব্যাখ্যা করাও দরকার। সাথে সাথে সীমাবদ্ধতা এবং ভবিষ্যৎ গবেষণার প্রস্তাবনা উল্লেখ করা হয়।
কেউ কেউ ফলাফল এবং আলোচনা একই অধ্যায়ে করে থাকেন। আন্ডারগ্রেড থিসিসে এটা খুব সাধারণ ব্যাপার।

অধ্যায় ৬. উপসংহার

একটা সংক্ষিপ্ত উপসংহার দিয়ে থিসিস লেখা শেষ করা। এখানে লেখকের মতামতও প্রতফলিত হয়।
অ্যাপেনডিক্স. বিব্লিয়োগ্রাফিক রচনা, কোয়েশ্চেনেয়ার এবং কোডিং ম্যান্যুয়াল, র্য ডেটা (যদি থাকে) ইত্যাদি।
রেফারেন্স. EndNote Program বা এ জাতীয় সফটওয়ার কাজটাকে অনেক সহজ করে দিতে পারে।
কিছু টিপস
১. যথেষ্ট সময় নিয়ে থিসিসের কাজ করা উচিত (কমপক্ষে ২ সেমিস্টার)।
২. ডিফেন্সের আগেই সব কাজ শেষ করা।
৩. সম্পাদনায় খুব সতর্ক থাকা। বানান-ব্যাকরণই হোক বা স্ট্রাকচারই হোক।
৪. এক চ্যাপ্টার থেকে অন্য চ্যাপ্টারে ফ্লো মেইন্টেইন করা।
৫. অভিজ্ঞ সিনিয়রকে দিয়ে চেক করে নেয়া। কারন, সুপারভাইজর সম্পাদনায় সময় দিবেন না।
৬. থিসিস জমা দেবার আগে এবং ডিফেন্সের আগে কমপক্ষে ২ বার পুরা থিসিস পড়ে নেয়া ভাল।

ফরম্যাট নিয়ে কিছু কথা

থিসিস একটি ফরমাল রিপোর্ট। তাই ফরমাল রিপোর্ট লেকচারটি দেখুন।
১. কোন ভাষায় লিখবেন, পৃষ্ঠার সাইজ কি, মার্জিন কেমন হবে, ফন্ট টাইপ ও সাইজ কোথায় কেমন, স্পেসিং কেমন হবে, টেবল এবং ফিগারের নাম্বারিং কেমন হবে ইত্যাদি স্পেসিফিকেশন জেনে নিন ইউনিভার্সিটি থেকে।
২. টাইটেল পেজ কাউন্ট করা হলেও নাম্বার টাইপ করা হয়না।
২. অ্যাবস্ট্রাক্ট কত শব্দের মধ্যে লিখতে হবে না বলা থাকালেও এক পৃষ্ঠায়ই থামুন।
৩. বায়োগ্রাফিক স্কেচ, ডেডিকেশন, একনলেজমেন্ট, টেবল অফ কন্টেন্টস, লিস্ট অফ ফিগারস, লিস্ট অফ টেবলস, লিস্ট অফ অ্যাব্রেভিয়েশন্স, লিস্ট অফ সিম্বলস, প্রিফেস ইত্যাদি প্রযোজ্য ক্ষেত্রে আলাদা আলাদা পৃষ্ঠায় লিখুন। এই অংশে সাধারণত রোমান নাম্বার ব্যাবহার করা হয়।
৪. ভূমিকা থেকে পৃষ্ঠা নম্বর ১ শুরু হয়। আন্ডারগ্রেড থিসিসে গ্লোসারী, ইনডেক্স সাধারণত সংযুক্ত করা হয়না।
৫. প্রত্যেক বিশ্ববিদ্যালয়ের থিসিস এবং ডিসার্টেশনের ফরম্যাট গাইড থাকা উচিত।

শর্ট গাইড লাইন :

১) ইন্ট্রোডাকশন:
এটাতে আপনার ইন্টারেস্টের ফিল্ডের শর্ট বর্ণনা থাকবে।
২) রেশনাল অফ স্টাডি/ব্যাকগ্রাউন্ড অফ স্টাডি:
কিছু পুরান কাজের সাপেক্ষে এবং বর্তমার সায়েন্সের আপডেট পর্যন্ত কতটুকু প্রয়োজনীয়তা আপনার এই ফিল্ডে কাজ করা, তার একটা শর্ট ডিসক্রিপশন থাকবে এই পোর্শনে।
৩) লিটারেচার রিভিউ:
এই পোর্শনে থাকবে আপনার ইন্টারেস্টের টপিকসের আগাগোড়া কতখানি কাজ হয়েছে এবং লেটেস্ট আপডেট কি পর্যন্ত! এখানেই বের হয়ে আসবে সামারি হিসেবে, আপনার ফিল্ডে কোন জায়গাতে এক্সটেনশনের সুযোগ আছে, সেটা করতে আপনি এই রিসার্চটা করছেন। এটার ব্যাপারে পরে আরো ডিটেইলস বলছি।
৪) অবজেকটিভ:
রিসার্চের আল্টিমেট অবজেকটিভ শেষ পর্যন্ত, অবশ্যই লিটারেচার রিভিউয়ের সাপেক্ষে।
৫) এনালাইসিস/এক্সপেরিমেন্টের ডিটেইলস:
সাবজেক্ট/ফিল্ড অনুযায়ী। এই জায়গাটাতেই আপনার ফাইন্ডিংসের যথার্থতা প্রমাণ করতে স্ট্যাটিসটিকাল কিছু থিওরী এপ্লাই করতে হবে, টেস্ট অফ হাইপোথিসিস প্রায় কম্পোলসারি। তবে উন্নতমানের থিসিসে রিগ্রেশন মডেলও আশা করা হয়
৬) সামারি অফ ফাইন্ডিংস/ডিসকাশন:
আপনার ইনভেনশনের শর্ট সামারি একটা।

Leave a Reply

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.